কী কেন কীভাবেওয়েবসাইট করার আগে যে বিষয়গুলো অব্যশ্যই জানা থাকা চাই।
বর্তমান বিশ্বায়নের এইযুগে সবকিছু হয়ে যাচ্ছে অনলাইনমুখী। ব্যাক্তি থেকে শুরু করে সামাজিক, রাষ্টীয় সব কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পিছনে থাকছে ইন্টারনেটের এক বিশাল অবদান। আর এমন একটা যুগে নিজের ব্যাক্তিগত বা ব্যাবসায়িক কোন অনলাইন পরিচিতি থাকবে না তা কি আর হয়? হ্যা সবার হয়ত কমবেশি ফেসবুকে বা অনন্যা সামাজিক মাধ্যমে নিজের একটা স্টাটাস আছে। কিন্তু সেখানে রয়েছে অনেক সীমাবদ্বতা।সেখানে আমরা নিজেকে বা নিজের ব্যাবশাকে ঠিক নিজেরদের মতো করে উপস্থাপন করতে পারি না। তাদের বেধে দেওয়া ডিজাইন আর সীমাবদ্বতার ভিতরেই থাকতে হয়।এতে কী আর পরিপূর্নতা আসে?না ,আসে না। তাই যারা নিজেকে বা নিজের ব্যবসায়ে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় নিজের মতো করে প্রকাশ বা প্রচারনার জন্য একটি ওয়েবসাইট করার কথা ভাবছেন তাদের জন্যও আজকের এই বিশেষ আর্টিকেলটি।
ওয়েবসাইটঃ
মুলত দুইভাবে করা যায়।ফ্রি আর পেইড।ফ্রিতে করতে চাইলে আপনি Blogspot.com,wordpress.com এ গিয়ে ফেসবুকের মতো করে নিজস্ব একটা প্রোফাইল করতে পারবেন মাত্র। ফ্রি জিনিসের বা পন্যের ভবিষ্যত কী…সেটা আশা করি কারোরই আজানা নয়।একটা জিনিস মনে রাখবেন…আপনার ওয়েবসাইট কিন্তু ১/২ দিন এর জন্য নয়,সারাজীবনের জন্য।তাই ফ্রীর প্রসঙ্গ এখানেই শেষ করছি। আর যদি চান,আকর্ষনীয় ডিজাইন ও পরিপূর্ন তথ্যে দিয়ে সুন্দর একটি কাঠামো গঠন করতে তাহলে আপনাকে অবশ্যই পেইড বা টাকা দিয়ে ওয়েবসাইট করার দিকেই যেতে হবে।আর এজন্য দরকার ডোমেইন আর হোস্টিং।এখানেই যত ঝামেলা।সঠিক ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন ও হোস্টিং ঠিক করতে না পারার কারনে অনেকেই বিশেষকরে নতুনরা ওয়েবসাইটের ১২টা বাজিয়ে ফেলে।
আর যাদের ডোমেইন/হোস্টিং নিয়ে ধারনা নেই তাদের জন্য ছোট্ট করে বলছি-
ডোমেইনঃ
সহজকথায় আপনার ওয়েবসাইটের এড্রেস বা ঠিকানাই হলো আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন।যেমনঃফেসবুকের ডোমেইন হলো facebook.com।ডোমেইন টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় ও প্রতিবছর ভাড়া দিতে হয়।
ডোমেইন কই পাবো
আমাদের দেশে অনেক ডোমেইন প্রোভাইডার আছে যেখানে আপনি প্রায় ৮০০ টাকা হলেই একটি টপ লেভেলের ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।এটা রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ।পরবর্তী বছর থেকে আপনাকে প্রতিবছর ৮০০ টাকা করে ভাড়া দিতে হবে।
সতর্কতাঃ
অনেক ভুয়া বা প্রতারক প্রতিষ্ঠান আছে,যারা আপনাকে ফ্রি বা ২০০/৩০০/৫০০ টাকায় ডোমেইন দেওয়ার কথা বলবে……এদের থেকে সর্বদা সাবধান থাকবেন। এরা ১ম বছর আপানাকে বিভিন্ন অফার দিয়ে লোভ দেখিয়ে ডোমেইন কিনাবে ,কিন্তু পরের বছর থেকে সেই আপনার কাছ থেকেই টাকাগুলো উঠিয়ে নিবে। তখন ওয়েবসাইট বাচাতে তাদের চাওয়া পূরন করতে আপনি বাধ্য থাকবেন। নতুবা আপনার ওয়েবসাইট শেষ। তাই…টাকা একটু বেশী লাগলেও যাদের কোন হিডেন-ফি নাই তাদের কাছ থেকে কিনুন। আপনার ওয়েবসাইট কিন্তু সারাজীবনের,১/২ দিনের জন্য না।
এবার হোস্টিং নিয়ে আলোচনা করা যাকঃ
হোস্টিংঃ ধরুন আপনি একটি বাড়ি করবেন। এজন্য আপনার দরকার একটি জায়গা নির্বাচন করা। ধরা যাক ,আপনি ঢাকাতে ২ একর জায়গার উপ বাড়িটি করবেন। তাহলে, ঢাকা হলো আপনার ডোমেইন বা ওয়েবসাইটের এড্রেস আর ২ একর পরিমানটা হলো আপনার হোস্টিং।
হোস্টিং কই পাবোঃ
যারা ডোমেইন সেল করে তাদেরকাছেই আপনি হোস্টিং পাবেন। তবে এক্ষেত্রেও প্রতারক থেকে সদা-সাবধান থাকবেন। টাকা একটু বেশি লাগে লাগুক।
দাম কেমনঃ
এটা নির্ভর করবে আপনি কত GB হোস্টিং চাচ্ছেন তার উপর।যদি ব্যাক্তিগত ওয়েবসাইট করেন তাহলে সবমিলিয়ে ২ GB হোস্টিংই যথেস্ট ও এটাই পারফেক্ট। আর 2 GB হোস্টিং এর মুল্য প্রায় ১৪০০ টাকা।আবার যদি ব্যবশায়িক ওয়েবসাইট করেন তাহলে নজর দিতে হবে ১০ GB বা তারও উপরে( ব্যবশায়ের আকারের উপর নির্ভরশীল)। এটার দাম পরবে আপনার প্রায় ২৩০০-৫০০০ টাকা।মানে যে যেমন লাভ করে আর-কী।কেউ একটু বেশী লাভ করে আবার কেউ কম।তবে এক্ষেত্রে নজর রাখতে পারেন-অনেক কোম্পানি মার্কেটিং করার জন্য অনেক কম লাভে হোস্টিং দিয়ে থাকে তাদের উপর।
চেস্টা করবেন একই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেই ডোমেইন ও হোস্টিং নেওয়ার জন্য।তাহলে ওরাই সব সেটিংস করে দিবে
আবার অনেক কোম্পানি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধাও দিয়ে থাকে।এতে করে পরবর্তীতে তাদের কাস্টমার সাপ্লাই দিয়ে ভালো পরিমান আয়ও করতে পাড়েন
হোস্টিং কেনার আগে যে বিষয়গুলো মনে থাকা চাইঃ
লোডিং স্পিডঃ
ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড অব্যশ্যই হাই থাকতে হবে।তা না হলে পড়তে হবে নান বিড়ম্ভনায় গুগল থেকে পেনাল্টিও খেতে পাড়েন।হোস্টিং প্রভাইডারের সাথে কথা বলে জেনে নিন কী-রকম লোডীং স্পিড তারা দিবে।
ব্যান্ডউইথঃ
আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর নির্ভর করবে আপানার ব্যান্ডউইথ এর উপর।যদি বেশী ব্যান্ডউইথ কিনেন তাহলে বেশী ভিজিটর আসতে পারবে আর কম ব্যান্ডউইথ কিনলে একটা সীমাবদ্বতা থাকবে।তাই যারা আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ দেয় তাদের কাছ থেকে কিনার চেস্টা করুন
আপটাইমঃ
অব্যশ্যই ৯৯.৯৯% থাকতে হবে। আর সচরাচর সবাই ৯৯.৯৯% দেয়
মানিব্যাক গ্যারান্টি-
মানিব্যাক গ্যারান্টি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। অনেক কোম্পানিই ৩০ দিনের মানিব্যাক গ্যারান্টি দিয়ে থাকে। কেনার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন কোম্পানি মানিব্যাক গ্যারান্টি দিচ্ছে কিনা।
৫) সাপোর্টঃ
অব্যশ্যই ২৪ ঘন্টা লাইভ -সাপোর্ট যারা দিবে তাদের কাছ থেকে কিনুন। এটা খুব গুরুত্বপুর্ন।
৬) কন্ট্রোল প্যানেল-
আপনার ওয়েব সাইট ম্যানেজ করার জন্য কন্ট্রোল প্যানেল প্রয়োজন। কন্ট্রোল প্যানেলের সাহায্যে আপনি আপনার ওয়েব সাইট সহজেই ম্যানেজ করতে পারেন। ওয়েব হোস্টিং এ সব চেয়ে সহজ এবং অধিক ফিচার সমৃদ্ধ কন্ট্রোল প্যানেল হচ্ছে সিপ্যানেল। তাই সবসময় সিপ্যানেল হোস্টিং নেয়ার কথা চিন্তা করুন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং
আমারতো বাজেট কম? ভাই কমের ভিতর ভালো কেমনে পাবো।কমের মধ্যে ভালো পাবেন না। তবে আপনি ১৩০০/১৪০০ টাকায় কিনে খুব তাড়াতাড়ি সেটার দাম উঠিয়ে নিতে পারবেন। শুধু দামই না আপনার নিয়মিত একটা ইনকামের ব্যবস্থা করতে পারবেন। কেমনে?কেনার আগে খুজ নিন কোম্পানিটি এফিলিয়েট সুবিধা দেয় কিনা। যদি দেয় তাহলে পরবর্তীতে তাদেরকে কাস্টমার সাপ্লাই দিয়ে আপনি একটা ভালো এমাউন্ট আয় করতে পারবেন।
৭) সার্ভার লোড-
সাভার ওভার লোড কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন কোম্পানির সাপোর্টে কথা বলে
SSD ও HSD:আপনার হোস্টিং অব্যশ্যই SSD হতে হবে। সাপোর্টে কথা বলে জেনে নিন তারা SSD না HSD প্রোভাইড করছে।
তাছারাও ইমেইল,দৈনিক ব্যাকাপ, personal client supporet,visrus protection ইত্যাদি বিষয়গুলোও অনেক বিবেচনা করবেন।
শুধু তিনটি জিনিস মাথায় রাখবেন-
১) স্পেস
২) ব্যান্ডউয়িথ
৩) প্রোগ্রামিং সাপোর্ট
এই সহজ তিনটি বিষয় বিবেচনা করে সহজেই আপনি চিনে নিতে পারবেন সেরা হোস্টিং প্রোভাইডারদের।