Tech News

ক্যাসিনো এলো কেমন করে

বাংলায় ক্যাসিনো শব্দটি প্রচলিত নয়; জুয়া শব্দটির চেয়ে। ক্যাসিনোকে জুয়ার আড্ডা বা জুয়ার আসর বলা যায়। ক্যাসিনো এমন জায়গায় বানানো হয় যেখানে মানুষের প্রচুর সমাগম হয়। যেমন হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিংমল এমনকি পর্যটন এলাকায়। 

ক্যাসিনোর উৎপত্তি ইতালিতে। ক্যাসা মানে হাউজ বা ঘর। ক্যাসিনো বলতে বোঝায় ছোট ভিলা, সামার হাউজ বা সামাজিক ক্লাব। ১৯ শতকে ক্যাসিনোর মানে কিন্তু এমন ছিল না! তখন সবাই ক্যাসিনোতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন নাচ, গান, বিভিন্ন ধরনের খেলা এমনকি ম্যাজিক শো দেখতে যেত। ১৬৩৮ সালে ভেনিসে প্রথম ক্যাসিনোর জন্ম- একথা বলা যায়। সেখানে মূলত, বিভিন্ন খেলার জন্য ক্যাসিনো ব্যবহার করা হতো; তার মধ্যে জুয়া ছিল। তবে শুরুর দিকে সব ক্যাসিনো কিন্তু জুয়া খেলার কাজে ব্যবহার করা হতো না।

আমাদের উপমহাদেশে জুয়া প্রাচীন এক খেলা। বিভিন্ন পুরাণে এই খেলার বিবরণ পাওয়া যায়। ফলে ধারণা করা হয় এই উপমহাদেশে অনেক আগে থেকেই ক্যাসিনো ছিল, আছে। এর পেছনে একটি কারণ রয়েছে। অনেক আগে থেকেই উপমহাদেশের যেখানে-সেখাসে জুয়া খেলা হতো অনিয়ন্ত্রিতভাবে। এটিকে নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে নিয়ে আসার উদ্দেশে সমাজপতি বা রাজারা ক্যাসিনো স্থাপন করে। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন, জুয়া থেকে রাজ্যের লভ্যাংশ ও শুল্ক নিশ্চিত করার উদ্দেশে প্রায় দুই হাজার বছর আগে রাজাদের উদ্যোগে ক্যাসিনো স্থাপন করা হয়। তবে এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ও স্থানের হদিস এখনো পাওয়া যায়নি। তবে কাউতিলিয়া নামে একজন প্রাচীন ভারতীয় অর্থশাস্ত্রবিদ এ বিষয়ে অনেক কিছু লিখে গেছেন। তার লেখায় উঠে এসেছে জুয়ার স্থান হিসেবে ক্যাসিনো স্থাপনের কিছু কারণ। পাশাপাশি ভারতীয় উপমহাদেশে ক্যাসিনো স্থাপনের কয়েকটি চিত্র লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন কাউতিলিয়া। এগুলোর মধ্যে যেমন আছে জুয়া নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসার কথা, আবার আছে জুয়া খেলায় সাম্য নিশ্চিত করা কথাও। এই খেলা থেকে রাজ্যের শুল্ক প্রাপ্তি নিশ্চিত করারও বেশ কিছু চিত্র উঠে এসেছে তার লেখায়। তখন জুয়া খেলে নিঃস্ব হওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটত। ফলে জুয়া খেলে কেউ যেন নিঃস্ব বা সর্বস্বান্ত না হন সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা হতো।

আমেরিকায় স্যালুন নামে প্রথম জুয়াবাড়ি নির্মিত হয়। চার প্রধান শহর- নিউ অরেলিন্স, সেন্ট লুইস, শিকাগো এবং সানফ্রান্সিসকোয় স্যালুন নির্মিত হয়। এসব স্যালুনে আগতরা পান করতো, আড্ডা দিতো এবং  জুয়া খেলতো। ১৯৩১ সালে নেভাদায় জুয়া খেলা বৈধ করা হলে সেখানে প্রথম বৈধ আমেরিকান ক্যাসিনো নির্মিত হয়। ১৯৭৬ সালে নিউ জার্সি আটলান্টিক শহরে জুয়া খেলা অনুমোদন করে। এটি বর্তমানে আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহৎ জুয়াড়িদের শহর।

স্লট মেশিন ক্যাসিনোর অন্যতম উপকরণ। ১৮৯০ সালে চার্লস ফ্রে’র মাথায় প্রথম এই মেশিন বানানোর ধারণা আসে। সে ধীরে ধীরে এই মেশিন বানানোর পরিকল্পনা করে এবং সফল হয়। লোকজন দেখে অবাক হয়ে যায় এবং আগ্রহ নিয়ে তার কাছে আসে। এক সময় স্লট মেশিন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। টেবিল এবং পোকার গেমের চেয়ে স্লট মেশিনের গেম জটিল। তারপরও এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। ১৯৯০ সালে ব্রিক এবং মরটার প্রচুর স্লট গেম বাজারে আনেন। মূলত ইন্টারনেটের কারণে এটি সহজ হয়ে যায়। ইন্টারনেটে এমন অনেক গেম রয়েছে। মাইক্রোগেমিং, নেটেন্ট, প্লেটেক ডেভেলপার কোম্পানিগুলো অনেক জুয়ার গেম ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়েছে। ফলে জুয়া শুধু এখন স্লট মেশিননির্ভর নয়, নেট দুনিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে।

১৩০০ সালে ফ্রান্সে প্রথম কার্ড গেমের প্রচলন শুরু হয়। একজন ফ্রেন্স ম্যাথমেশিয়ান, প্যাসকেল এই খেলাটি গবেষণার উদ্দেশ্যে বাজারে আনেন। পরে খেলাটি জনপ্রিয় হয়ে যায়। যাই হোক, জুয়া খেলা হলেও এর প্রচুর ক্ষতিকর দিক রয়েছে। কত মানুষ জুয়া খেলে ভবিষ্যত নষ্ট করেছে, সম্পদ এমনকি সম্মানটুকুও হারিয়েছে তার হিসেব করা কঠিন। মূলত এটি নেশা। যে কারণে প্রতিটি সমাজেই এই খেলা নিরুৎসাহিত করা হয়। তারপরও যুগে যুগে খেলাটি টিকে আছে অনেকের দীর্ঘশ্বাস, অভিশাপ মাথায় নিয়ে। 

Dollar Buy Sell Web Site Make

DoridroTech

Get all Tech News, Freelancing Tips, Computer Tips, Earn Money Online Tips in Bangla, Latest Tech News of Bangladesh, Domain Registration, Web Hosting, Web Design and Development.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Open chat
1
Hello 🙄
Can we help you?