স্মার্টফোন কেনার আগে
ঢাকার আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার হতে শনিবার পর্যন্ত চলবে স্মার্টফোন ও ট্যাব মেলা । বরাবরের মতো এতে সর্বশেষ প্রযুক্তি ও ডিজাইনের ডিভাইস নিয়ে হাজির হবে দেশী-বিদেশী সেরা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলো । থাকবে বিশেষ ছাড় ও উপহার । মেলায় স্মার্টফোন কিনতে এসে অনেকেরই চিন্তার অন্ত থাকে না, এত মডেলের ভিড়ে কোন ফোনটি তার দরকার, কোনটি তার প্রয়োজন মেটাবে ।
একেক জনের স্মার্টফোন ব্যবহারের উদ্দেশ্য বা প্রয়োজন একেক রকম। কেউ কথা বলা আর অল্পস্বল্প ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য স্মার্টফোন খোঁজেন, কেউ স্মার্টফোন দিয়েই সেরে নিতে চান পেশাগত নানা কাজ । কেউ কেউ ফটোগ্রাফির কাজেও স্মার্টফোন ব্যবহার করেন কেউ আবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে খেলেন উচ্চ গ্রাফিক্সের নানা গেইম । নিজের কাজ ও প্রয়োজন অনুয়ায়ী কীভাবে স্মার্টফোন বাছাই করবেন চলুন তা জেনে আসি ।
র্যামঃ
যারা স্মার্টফোনেই পেশাগত ভারি কাজ, মাল্টি টাস্কিং কিংবা উচ্চ গ্রাফিক্স গেইমিং করতে চান তাদের ক্ষেত্রে প্রধান বিবেচ্য বিষয় র্যাম । এমন ব্যবহারকারীদের জন্য বেশি র্যামের বিকল্প নেই। খানিকটা বেশি বাজেটে দেশের বাজারে ৬ থেকে ৮ গিগাবাইট র্যামের কিছু স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে । ৬ হতে ৮ গিগাবাইট র্যামের এসব স্মার্টফোন মেলায় ছাড়-উপহারে কিনতে পারবেন ।তবে যারা সাধ্যের মধ্যে, মধ্যম বাজেটে দ্রুতগতির স্মার্টফোন খোঁজেন তারা ২০ হাজার টাকা বাজেটের মধ্যে ৪ গিগাবাইট র্যামের স্মার্টফোন কিনতে পারেন । আর যারা কথা বলা কিংবা কিছুটা ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করতে চান তাদের জন্য ২ থেকে ৩ গিগাবাইট র্যামের স্মার্টফোনই যথেষ্ট।
প্রসেসরঃ
স্মার্টফোনের পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে র্যামের পাশাপাশি প্রসেসর সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রসেসর ভাল মানের না হলে ফোন স্লো বা হ্যাং হয়ে যাবার মত বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে । বেশি বাজেটের স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে দেখে নিতে হবে ফোনে ব্যবহৃত প্রসেসরটি হালনাগাদ কিনা । গেইমিংয়ের ক্ষেত্রে সর্বশেষ মডেলের ফ্ল্যাগশিপ প্রসেসর সম্বলিত ফোনগুলোকে প্রাধান্য দেয়া উচিত, পাশাপাশি বেশি র্যাম । যারা ফটোগ্রাফি ভালবাসেন আর স্মার্টফোন ব্যবহার করে ভাল মানের ছবি তুলতে চান তাদের জন্য স্মার্টফোন কেনার আগে ক্যামেরা দেখে নিতে হবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ।
বাজারে চলতি ট্রেন্ড হিসেবে ট্রিপল ক্যামেরা সম্বলিত স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলো ব্যবহার করে বেশ ভাল মানের ছবি তোলা যায় । এছাড়াও স্বল্প কিংবা মধ্যম বাজেটে মিলবে ডুয়াল ক্যামেরার স্মার্টফোন । যারা সেলফি তুলতে ভালবাসেন তাদের ক্ষেত্রে ফোনের ফ্রন্ট ক্যামেরা দেখে নিতে হবে । দেশের বাজারে ৩২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরারও বেশ কিছু স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে ।
ব্যাটারিঃ
স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ব্যাটারির সক্ষমতা ভাল না হলে ভোগান্তির শেষ থাকে না । তাই সব ধরনের স্মার্টফোন কেনার আগে তার ব্যাটারির ব্যাকআপ সম্পর্কে ভালভাবে জেনে নেয়া উচিত । বাজেট বিশেষে ৩ থেকে ৪ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি সম্বলিত স্মার্টফোন কেনা ভাল । এর পাশাপাশি ব্যাটারিকে কত সময়ের মধ্যে ফুল চার্জ করে নেয়া যায়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে । চলতি সময়ে ব্যাটারিকে দ্রুত চার্জ করার নানা প্রযুক্তি সংযোজন করেছে স্মার্টফোন ব্রান্ডগুলো ।
নিরাপত্তা ফিচারঃ
স্মার্টফোনের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার প্রয়োজনের জন্য হরেক রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে । এগুলোর মধ্যে সর্বশেষ সংযোজন হলো ফিংগারপ্রিন্ট লক কিংবা ফেইস আনলকের মত সুবিধা । এছাড়া চুরি ঠেকাতেও কিছু ফিচার থাকে অনেক স্মার্টফোনে। প্রয়োজন অনুযায়ী এগুলোও দেখে নেয়া ।
ফোরজি ও স্টোরেজঃ
ফোরজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার যাবে কিনা সেটা অবশ্যই স্মার্টফোন কেনার আগে নিশ্চিত হতে হবে । এছাড়াও ফোনে কতগুলো স্টোরেজ পাওয়া যাবে এবং কত গিগাবাইট পর্যন্ত মেমোরি কার্ড সমর্থন করবে তাও জেনে নিতে হবে ।
বিক্রয়ত্তোর সেবাঃ
স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ওয়ারেন্টি সুবিধা । দেশের বাজারে স্মার্টফোন ব্রান্ডগুলো সাধারনত ১ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা দিয়ে থাকে । ব্রান্ডভেদে এই ওয়ারেন্টির নীতিমালায় ভিন্নতা থাকতে পারে । তাই স্মার্টফোন কেনার আগে অবশ্যই বিক্রোত্তর সেবার বিস্তারিত জেনে নিতে হবে ।